বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মান একে অপরের তুলনায় ভিন্ন। মুদ্রার মান নির্ভর করে একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈদেশিক বাণিজ্য, এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। ২০২৫ সালে কোন দেশের মুদ্রার মান সবচেয়ে কম, তা জানতে চলুন বিশদে আলোচনা করা যাক।
মুদ্রার মান নির্ধারণের কারণ
মুদ্রার মান কম বা বেশি হওয়ার পেছনে কয়েকটি মূল কারণ কাজ করে।
- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: একটি দেশের অর্থনীতি যদি দুর্বল হয়, তবে তার মুদ্রার মান কমে যায়।
- বৈদেশিক ঋণ: বেশি ঋণ থাকলে মুদ্রার মান পড়ে যেতে পারে।
- মুদ্রাস্ফীতি: উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
- রপ্তানি ও আমদানি: রপ্তানি কম এবং আমদানি বেশি হলে মুদ্রার মান দুর্বল হয়।
২০২৫ সালে সবচেয়ে কম মুদ্রার মানের দেশ
২০২৫ সালে ভিয়েতনামের ডং (VND) বিশ্বের সবচেয়ে কম মানের মুদ্রা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর কিছু কারণ রয়েছে:
- ১ বাংলাদেশি টাকার সমান ভিয়েতনামের প্রায় ২৭১ ডং।
- ভিয়েতনাম একটি উন্নয়নশীল দেশ। শিল্প এবং কৃষি খাত উন্নয়নের প্রাথমিক ধাপে রয়েছে।
- মুদ্রার মান কম থাকলেও রপ্তানি ও পর্যটন খাত দেশটির অর্থনীতির একটি বড় অংশ।

অন্যান্য মুদ্রার মান
২০২৫ সালে নিম্ন মুদ্রার তালিকায় আরও কয়েকটি দেশের নাম উঠে আসে:
- ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া (IDR) একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ১ মার্কিন ডলার সমান প্রায় ১৫,০০০ রুপিয়া।
- ইরান: ইরানি রিয়াল (IRR) বেশ দুর্বল। ১ মার্কিন ডলার সমান কয়েক লক্ষ রিয়াল।
- জিম্বাবুয়ে: জিম্বাবুয়ের ডলার একসময় হাইপারইনফ্লেশনের কারণে ব্যাপক মূল্যহীন হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে তারা মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য শক্তিশালী মুদ্রা ব্যবহার করছে।
টাকার মান বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ
কম মুদ্রার মান অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য বিভিন্ন দেশ নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে:
- রপ্তানি বাড়ানো: রপ্তানি বৃদ্ধি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। উদাহরণস্বরূপ, কুয়েত তেলের রপ্তানির মাধ্যমে তাদের অর্থনীতি মজবুত করেছে।
- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখলে মুদ্রার মান স্থিতিশীল থাকে।
- বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ: বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি মুদ্রার চাহিদা বাড়ায়।
কেন কিছু দেশের মুদ্রার মান কম
কম মুদ্রার মানের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বাণিজ্য ঘাটতি: যখন একটি দেশের আমদানি রপ্তানির তুলনায় বেশি হয়।
- রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা: রাজনৈতিক সমস্যাগুলি বিদেশি বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়িক পরিবেশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
- প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব: যেসব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ কম, তাদের বৈদেশিক আয়ের পথ সংকুচিত হয়।

শেষ কথা
বিশ্বের মুদ্রার মান মূলত নির্ভর করে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ওপর। ২০২৫ সালে ভিয়েতনামের ডং বিশ্বের সবচেয়ে কম মানের মুদ্রা হিসেবে পরিচিত। তবে এটি কোনও দেশের দুর্বলতার একমাত্র মানদণ্ড নয়। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে মুদ্রার মান বাড়ানো সম্ভব। আপনি যদি এমন দেশে ভ্রমণ করেন, যেখানে মুদ্রার মান কম, তবে আপনি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি জিনিস কিনতে পারবেন। এটি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা হতে পারে।